২০ টাকা ব্যাংক একাউন্ট

২০ টাকার সরকারী ব্যাংক একাউন্টে ৫০০ টাকার জরিমানা: সাধারণ গ্রাহকের সাথে প্রতারণা

আমি ব্যাংকিং-এর ছাত্র না, এই খাতের বিশেষজ্ঞও নই। আমি একজন সাধারণ গ্রাহক, যার বিভিন্ন ব্যাংকের সাথে কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু কথা বলতে চাই।

আমরা সবাই জানি, ব্যাংকিং-এ “ফ্রি” বলে কিছু নেই। প্রত্যেক ব্যাংকের সেবা একরকম নয়—কেউ ভালো, কেউ মাঝারি বা খারাপ। আমার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, অগ্রণী ব্যাংকের সেবা খুব একটা স্বচ্ছ নয়, বিশেষ করে নওহাটা শাখায়।

অগ্রণী ব্যাংক এবং মোহনপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে একটি সরকারি চুক্তি অনুযায়ী প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ২০ টাকার ব্যাংক একাউন্ট খোলা হয়। প্রতি ব্যাচে আনুমানিক ১২০ জন করে প্রশিক্ষণার্থীদের একাউন্টে ১৫০০-২০০০ টাকা পর্যন্ত জমা হয়। প্রতি দুই-তিন মাসে প্রায় ৩ লাখ টাকার মতো লেনদেন হয় এই একাউন্টগুলোতে।

কিন্তু হঠাৎ করেই ব্যাংক বাধ্যতামূলক করেছে যে প্রতিটি একাউন্টে কমপক্ষে ৫০০ টাকা ব্যালেন্স থাকতে হবে। ফলাফল? যে প্রশিক্ষণার্থী ট্রেনিং শেষে ৯০০০-১২০০০ টাকা পায়, তার মধ্য থেকে ৫০০ টাকা আটকে যায় ব্যাংকের কাছে—কোন কারণ ছাড়াই।

চলুন হিসাব করি:

এই ব্যাপারটি সবাই চুপচাপ মেনে নিচ্ছে, কারণ এটা সরকারি প্রোগ্রাম, একটা দক্ষতা অর্জন হচ্ছে, কাজ শিখে আয়ও হচ্ছে। কিন্তু এর আড়ালে ব্যাংক একটি বড় অংকের অর্থ গচ্ছিত রেখে সুদে লাভ করছে।

➤ যদি ১২০ জনের প্রতিটি একাউন্টে ৫০০ টাকা আটকে রাখা হয়, তাহলে মোট:
৫০০ × ১২০ = ৬০,০০০ টাকা!

➤ এই টাকা ব্যাংক হাতে পেয়েই বসে নেই—এটার উপর ৮% সুদ পেলে:
৬০,০০০ × ৮% = ৪,৮০০ টাকা লাভ শুধু সুদ থেকেই- একেবারেই বিনা ঝামেলায়।

এই পুরো পদ্ধতিটি সাধারণ গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। বড় ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যাংক মাথা নত করে, আর সাধারণ মানুষকে করে মুরগী—যার টাকা তারা কেটে নেয়, আর তুলে দেয় লোভী শিয়ালের হাতে।

এভাবে ব্যাংকের বাড়তি আয় হলেও, সাধারণ গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রশ্ন হলো, এই ‘২০ টাকার একাউন্ট’-এর নামে ৫০০ টাকা আটকে রাখার যৌক্তিকতা কী? এটি কি ন্যায্য? নাকি এটি প্রতারণা?

Leave a Comment